মুস্তাফিজুর রহমান নেই, তাসকিন আহমেদ নেই, এমনকি নেই নাহিদ রানাও– তাহলে কাদের নিয়ে লাহোরের পেস উইকেটে লড়বে বাংলাদেশ! অথচ বাংলাদেশ দলের কোচ ফিল সিমন্স টি২০ ফরম্যাটে পেস বোলিংকেই দলের শক্তির জায়গা হিসেবে বিবেচনা করছেন। শরিফুল ইসলাম, হাসান মাহমুদ, তানজিম সাকিব কী পারবেন সেই প্রত্যাশা মেটাতে?
গাদ্দাফি স্টেডিয়ামের উইকেট ব্যাটিং সহায়ক। ফাইনালসহ সদ্য সমাপ্ত পিএসএলের শেষ চারটি নকআউট ম্যাচে দুইশ ছাড়ানো স্কোর দেখা গেছে পাঁচ ইনিংসে। দুটি ইনিংসে ১৯০-এর উপরে রান হয়েছে। এই রানবন্যার মাঝেও পেসাররা ভালো বোলিং করেছেন। রোববার রাতে দুইশর বেশি রান ওঠা ফাইনালে শাহিন আফ্রিদি ৪ ওভারে মাত্র ২৪ রান দিয়ে নিয়েছেন ৩ উইকেট। লাহোরের অন্য দুই পেসার হারিস রউফ ও সালমান মির্জা কিছুটা ব্যয়বহুল হলেও ২টি করে উইকেট নিয়েছেন। কোয়েটার মোহাম্মদ আমির শেষ ওভারে মার খেলেও প্রথম তিন ওভার দারুণ বোলিং করেন। শুধু ফাইনাল নয়, লাহোরে হওয়া বাকি তিনটি নকআউট ম্যাচেও পেসারদের দাপট দেখা গেছে। এখানে পেসারদের সফলতার শর্ত একটাই, লাইন-লেন্থ ঠিক রেখে ধারাবাহিকভাবে ভালো জায়গায় বল ফেলতে হবে। সে সঙ্গে গতি থাকতে হবে। এ জায়গাটাতেই পিছিয়ে বাংলাদেশের পেসাররা।
মুস্তাফিজ-তাসকিন থাকলে এই অভাবটা যে অনেকটাই ঘুচে যেত, সেটা সোমবার সন্ধ্যায় গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে অনুশীলন শেষে কোচ স্বীকার করেছেন, ‘মুস্তাফিজ এখন সিনিয়র। আপনি তো আপনার সিনিয়র পেসারকে মিস করবেনই। আইপিএলে সে কেমন বোলিং করেছে, সেটা আমরা দেখেছি। আমরা তাঁকে মিস করব। তবে এটা অন্যদের জন্য নিজেকে মেলে ধরার সুযোগও। আশা করছি, এই সিরিজে যে কোনো একজন ফিজের অভাবটা পূরণ করে দেবে।’
মুস্তাফিজ ও তাসকিন না থাকায় বোলিংয়ের ভারসাম্যে যে ব্যাঘাত ঘটেছে, সেটাও অকপটে বলেছেন সিমন্স, ‘এই ফরম্যাটে বোলিং আমাদের শক্তির জায়গা। তবে তাসকিন ও ফিজের মতো দুজন সিনিয়র পেসার না পাওয়ায় বোলিংয়ের ভারসাম্যে কিছুটা ব্যাঘাত ঘটবে।’
আইপিএল খেলতে গিয়ে চোট পাওয়া মুস্তাফিজের জায়গায় খালেদ আহমেদকে দলে নিলেও নাহিদ রানার বদলে কাউকে নেয়নি বাংলাদেশ। ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে এ সিরিজ থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেন পিএসএল খেলতে গিয়ে ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষের মাঝে পড়ে যাওয়া নাহিদ। পিঠের চোটের কারণে এ সফর থেকে ছিটকে গেছেন সৌম্য সরকারও, যিনি টপ অর্ডারে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি মিডিয়াম পেস করতে পারেন। সৌম্যর বদলে নেওয়া হয়েছে স্পিনিং অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজকে।
এই খর্ব শক্তির পেস আক্রমণ নিয়ে প্রথম মিশন শুরু করতে যাচ্ছেন নতুন পেস বোলিং কোচ শন টেইট। হেড কোচ সিমন্সের প্রত্যাশা অভিজ্ঞতার ঘাটতি থাকলেও পেসারদের নিয়ে ভালো কিছু করবেন টেইট। বিশেষ করে, অসি এ পেসারের পিএসএলে কোচিং করানোর অভিজ্ঞতা কাজে দেবে বলেই বিশ্বাস সিমন্সের। এতসব নেতিবাচক বিষয়ের মধ্যে একটা ভালো খবর হলো শারজাহের মতো শিশির নেই লাহোরে।